Thursday, June 27, 2013

ক্ষুধা

”ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়
পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি ৷৷”

সত্যিই ক্ষুধা এক ভয়ংকর সৃষ্টি। আল্লাহতায়ালা তাঁর সকল সৃ্ষ্ট জীবকে এই ক্ষুধা দান করেছেন এবং সেই মতে তাদের এই ক্ষুধা নিবারনেরও পদ্ধতি ঠিক করে দিয়েছেন।

প্রায় প্রতিটি প্রানীই ক্ষুধা নিবারনের জন্য পরিশ্রম করে থাকে, তারপর অন্য কিছুর জন্য। যেমন, গাছপালা খাদ্যের জন্য দূর-দূরান্ত পর্যন্ত তার শাখা প্রশাখা বিস্তার করে থাকে। বন্য জীবযন্তু তাদের খাবার সংগ্রহের জন্য বনের এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে ঘুরে বেড়ায়। ভোজন পর্ব শেষ হলেই তাদের সকল কর্মকান্ড শেষ হয়ে যায়।

এই ক্ষুধা নিবারনের জন্য বন্য পশুদের একে অপরকে আক্রমন করতে হয়। এতে তাদের কোন এক প্রজাতির জয় হয়। তখন সেই প্রজাতি রাজা বলে চিহ্নিত হয়। যেমন বনের রাজা সিংহ। অর্থাৎ সিংহ হচ্ছে বনের অন্যান্য পশুদের তুলনায় শ্রেষ্ঠ। সিংহ এখানে ক্ষুধার তাড়নায় নিজের কর্মকান্ড সাজিয়ে নিজেকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে প্রমান করেছে। ঠিক তেমনি আমরা আশরাফুল মাখলুকাত আমাদের কর্মদ্বারা প্রমান করেছি আমরা সকল প্রাণীর তুলনায় শ্রেষ্ঠ।

মানুষ আর পশুর ক্ষুধা নিবারনের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে একটি পশু যখন তখন তার মর্জি মতো ক্ষুধা নিবারন করতে পারে, মানুষ তা পারেনা। মানুষকে তার ক্ষুধা নিবারনের জন্য কিছু নিয়মনীতি মেনে চলতে হয়, তাকে সমাজ মানতে হয়। যার জন্য তাদের প্রত্যেককে কর্মক্ষেত্র সাজাতে হয়। এই কর্মক্ষেত্রেই মানুষ তার ক্ষমতা প্রকাশ করে। এখানে প্রত্যেকে প্রত্যেকের যোগ্যতা প্রমানে ব্যাস্ত।

যখন কোন একজনের ক্ষুধা নিবারনের ব্যবস্থা হয়ে যায় তখনই তার বিশ্রাম নেবার সময় হয়ে আসে। কিন্তু প্রতিদিনই আমাদের এই ব্যস্ততা বেড়ে চলছে। দিনকে দিন আমরা ব্যস্ত থেকে ব্যস্ততম হয়ে উঠছি এবং নিজের কর্মক্ষেত্রে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানে ব্যাকুল হয়ে উঠছি।

একমাত্র আমাদের এই ক্ষুধার তাড়নায় আমরা আমাদের এই বর্তমানে বসবাস করছি, যা কিনা বিগত দিনের তুলনায় শ্রেষ্ঠ। এই ক্ষুধার কারনেই আমরা শ্রেষ্ঠত্ব প্রমান করছি, আবার হয়ে যাচ্ছি পশুর চেয়েও নিকৃষ্ঠ।।

আমাদের এই ক্ষুধা প্রতিদিনই বেড়ে চলছে। জানিনা আদৌ কখনও কি এই ক্ষুধা আমাদের পরিপূর্নভাবে নিবারন হবে কি না?

No comments:

Post a Comment