Sunday, July 7, 2013

অসম

সকালে ঘুম থেকে উঠে একটা জমপেশ নাস্তা সেরে ব্লাক কফির মগটা হতে নিয়ে বারান্দায় গেলাম মনের সুখে দিনের প্রথম সিগারেটটা ধ্বংস করার জন্য। প্যাকেটটা হতে নিয়েই দেখলাম মাত্র একটাই অবশিষ্ট আছে। সেটারই সদব্যবহার করলাম।

আজ সকাল থেকেই আষাঢ়ের উপস্থিতিতি ভালই জানান দিচ্ছে। আশেপাশের রাস্তায় যথারিতি বান ঢেকেছে। মানুষজন কেউ মাথায় ছাতা নিয়ে কেউবা ভিজে ভিজে তাদের স্ব স্ব কর্মে সাড়া দিচ্ছে। এইসব হাবিজাবি দেখতে দেখতে সিগারেটটা শেষ করে ঘরে ফিরে আসলাম।

যথারিতি একটা নির্দিষ্ট সময় পর শরীর তার নিকোটিনের চাহিদার জানান দিল। প্যাকেট শূন্য। পাশের দোকানটাও বৃষ্টির কারনে বন্ধ করে দিয়েছে ক্রেতার অনুপস্থিতিতে। সিগারেট আনতে হলে দূরের একটা চায়ের টঙ্গ দোকানে যেতে হবে। যে অঝোড় ধারায় বর্ষন হচ্ছে তাতে বাহির হতে চরম অলসতা লাগলো। নিজেকে বললাম, কিছুক্ষন সবুর করো, বৃষ্টিটা একটু থামলেই…।

শরীরটা দেখলাম সুবোধ বালোকের মতো অনুরোধটা রাখলো। সময় তার নিয়ম অনুযায়ী বয়ে চলছে। থেমে থেমে মাথাটা তাগাদা দিতে লাগলো। বৃষ্টিটাতো থামছেই না। চলোনা, অনেকদিন বৃষ্টিতে ভেজা হয়না, আজ না হয় ছেলেবেলার স্মৃতিটুকু আরও একবার ঝালিয়ে নেই। তুমিতো অন্যান্যদিন ব্যস্ত থাক, আজই সুযোগ চলো একটু ভিজে আসি।

বুঝলাম, নিকোটিনের চাহিদাটা আমার সাথে ছলনার আশ্রয় নিচ্ছে। মনকে ক্ষীন একটা বাঁকা হাসি উপহার দিয়ে বললাম, ধীরে বন্ধু ধীরে, এতো উতলা হবার কি আছে? দু’দিন বাদে রোজা তখনতো তোমাকে সারাদিনই সহ্য করতে হবে। এখন যখন সুযোগ পেয়েছো একটু চর্চা করে নেও।

খেলাটা বেশ জমে উঠেছিল। এ যেন অনেকটা ছোটবেলার চোর-পুলিশ খেলা। জয়ের পাল্লাটা ধীরে ধীরে আমার দিকে ঝুঁকে আসছিল। ঠিক তখনই আমার সুবুদ্ধির উদয় হলো। আমার মতো ৫ ফুট ৮ ইঞ্চির মানুষের পক্ষে ৩ ইঞ্চির কারও সাথে লাগতে যাওয়াটা মানায় না। হাজার হোক, আমি সৃষ্টির সেরা, আমি কিভাবে একটা ৩ ইঞ্চির নির্জীব পদার্থের সাথে লাগতে যাই। ছি:! ছি:! এ যে অসম যুদ্ধ। এতো মানব সম্প্রদায়ের জন্য ঘোর অপমান। না, তা আমি কখনও হতে দিবনা। ………….


২৯/০৬/২০১৩

No comments:

Post a Comment